ব্রেকাপের পরের সময় কিভাবে কাটে ও কাটাবেন?
ব্রেকাপের পরের সময় কিভাবে কাটে ও কাটাবেন?
কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন ব্রেকাপের পরের সময় এর মানুষিক যন্ত্রনা?
ব্রেকাপ একটা হৃদয় বিদারক ব্যাপার। নিদারুন মানুষিক যন্ত্রনায় ব্রেকাপের পরের সময় কাটে। ব্রেকাপে প্রেমিক বা প্রেমিকা দুজনেই ব্যাথিত হয়। বর্তমান সময়ের প্রেম উচ্চাভিলাষী হয়ে থাকে তাই ব্রেকাপের মত ঘটনা বেশি ঘটে। জীবন অভিধানের মত। এর মাঝে আমরা সব খুজে পাই। মাঝে মাঝে জীবনে এমন কিছু ঘটে যায় যা উত্তর আমরা জিবনাভিধানে খুঁজে পাই না। যতই খুজিনাকেন উত্তর পাই না। ব্রেকাপ এমনই একটা ঘটনা। যারা ব্রেকাপের মঝে দিয়ে যায় নি তারা বুঝতেই পারবে না ব্রেকাপের পরের পাথর কষ্ট বা বা ব্রেকাপের পরের সময় কাটে কিভাবে।
জীবন অনেকটা উত্তর পত্রের মত। প্রশ্নের ছড়াছরি আর ভিন্ন ভিন্ন উত্তর। এক প্রশ্নের কত উত্তর তবু যেন কোন সঠিক উত্তর নাই। ব্রেকাপের পরে জীবন হতে পারে অতি সাধারন অথবা জট পাকানো বা কমপ্লিকেটেড। যারা কোনদিন কোন উপদেশ দেননি তারাও ব্রেকাপের পর দরদ নিয়ে আসবেন উপদেশ দিতে। আমার মতে এসব উপদেশ নয়। এ আপনাকে বিরক্ত করার একটা নব্য উপায়।
নারী বা পুরুষের একে অপরের শরিরের প্রতি আকর্ষণ যুগ যুগ ধরে। ভালোবাসা বেশির ভাগ সময়েই শরিরের প্রতি লোভ-লালশা। জানুনঃ এটা ভালোবাসা নাকি লোভ?
যে ভালোবাসায় শরীর থাকে সর্বময় সেই ভালোবাসা বেশিদিন টিকে না। ব্রেকাপের আরেক উল্লেখযোগ্য কারন শরীরের প্রতি লোভ। এমন প্রেমে ভালোবাসা থাকে না। থাকে শুধু শরীর আর শরীর। তাই বলিকি ভালোবাসুন মন বুঝে নাহয় ভুগতে হবে নিদারুন যন্ত্রনায়।
একটা মানুষের আসল রূপ দেখা যায় ব্রেকাপের পরে, আগে তো সব থাকে অভিনয়। যাদের ভালবাসা সত্যিকারের হয়, তারা ব্রেকাপের পরে কেউ কারো ক্ষতি করে না বরং চায় প্রিয় মানুষটা ভাল থাকুক।
ব্রেকাপের পরে কিছু কিছু এক্স বলে “আমরা কি বন্ধু হয়ে থাকতে পারিনা”? মানে হইলো “কিডনাপার আপনারে ছাইড়া দিয়া বলতেছে, “যোগাযোগ রাইখো, কিপ ইন টাচ”।
ভঙ্গুর জীবনঃ
যখন আমরা প্রেমে পরি সব কিছু রঙিন মনে হয়। চারপাশে আলো আর ছন্দের নাচন। ব্রেকাপের সাথে সাথে এসব মরে যায়। মনেহয় জীবন মূল্যহীন। যেন ব্রেকাপের পরের সময় কাটে না, থেমে যায় এক বিন্দুতে। অনেকে তো অতি কষ্টে সুইসাইড করে ফেলেন। কিন্তু আত্মহত্যা কি কোন সমাধান। ব্রেকাপের পর আত্মহত্যা নয় অথবা নয় মুচড়ে যাওয়া। ব্রেকাপের কারন খুঁজে বের করুন। ব্রেকাপের পজেটিভ দিক ভাবুন। নিজেকে সময় দিন। নিজেকে কষ্ট দেওয়া মানে যে আপনাকে ছেড়ে গেছে তাকে জয়ী করিয়ে দেওয়া। মনে রাখবেন, আমাদের জীবন একদিনের হয়, জীবনকে কেন কষ্ট দেবো? জীবন ভাঙা কাচ নয় যে জোড়া লাগানো যাবে না। জীবন চলমান। যে গেছে তার পথ চেয়ে থেকে কষ্ট না পেয়ে এবার নিজেকে সাজিয়ে নেওয়াই উত্তম। জীবন সুন্দর হলে হবে প্রেমময়। ভাঙা জীবন অভিশাপের মত। কেন নিজেকে প্রকৃতির কাছে অভিশাপ করে রাখবেন। এবার নিজেকে নিজের মত করে সাজিয়ে নিন। এতেই মঙ্গল।
জানেন তো প্রথম প্রেম আর শেষ প্রেম বলতে কোনও কথা নাই। ব্রেকাপ হয়ে গেছে। জীবনে আবার প্রেম আসবে। যে প্রেম নতুন সেই প্রথম প্রেম। অতীত শিক্ষার আধার। অতীত প্রেম নিয়ে পড়ে থেকে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার মত বোকামি আর নাই। অতীত থেকে শিক্ষা নিন আর নতুনের সাথে জীবন গরুন। ব্রেকাপের পরের জীবন ভুলে যান শুরু করুন নতুনের সাথে নতুন জীবন। এটাই জীবনের সার্থকতা। সফলতা।
জীবন সাধারনঃ
জীবন অতি সাধারন। আবার অনন্য কিছু। এই জীবন গেলে আর জীবন পাবেন না। সবার মত হতে শিখুন। সবাই যে ব্রেকাপের পরের সময় গুলোতে ভেঙে পরবে তা নয়। অনেকে খুব সাধারন জীবনযাপন করে থাকেন। আপনাকেও সাধারন ভাবে জীবন অতিবাহিত করতে হবে। ব্রেকাপের পর যে অতিরিক্ত যত্নশীল বা খেয়ালি হতে হবে তা নয়। আপনার জীবন সাধারন ভাবেও চলতে পারে। ব্রেকাপের আগের ও পরের চলন কিছুটা আলাদা হয় এটাই স্বাভাবিক। আগের মত করেই খাওয়া-দাওয়া চলে, ঘুম হয়, সকালে জেগে উঠেন আগের মতই, গুরুজনদের দেখলেও সেই আগের সম্মান হারিয়ে যায় না, সুন্দর ব্যবহার অব্যাহত থাকে, আপনি বিশ্রাম নিচ্ছেন, পরাশুনা করছেন, পূর্বের মত ঘরের ও বাহিরের কাজ যসমান তালেই করে যাচ্ছেন, জব ছেড়ে দেননি। এসবের মানে জীবন ব্রেকাপের পর সাধারন।
আগের থেকে আপনি আরও বেশি চিন্তা মুক্ত। এখন আর কারও জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। কারও জন্য গিফট কিনতে হয় না, শপিং করতে হয় না, একজনার জন্য আলাদা সময় রাখতে হয় না আজ পুরোটা সময় নিজের। কারও জন্ম তারিখ ভুলে গেলে কথা শুনতে হবে বলে জোর করে মনে রাখতে হয় না। এক জনার সাথেই সারাদিন ঘুরতে হয় না। বন্ধুদের ইগ্নোর করতে হয় না। কোন কাজে কোন রকম বাধা নাই। কত সাধারন আর সুন্দর জীবন চলছে ব্রেকাপের পরে। দেখুন ব্রেকাপের পর জীবন কত সহজ হয়ে গেছে। ব্রেকাপের পরের জীবনকে জটিল না ভেবে সাধারন ভাবুন, দেখবেন জীবনে কত রঙের নাচন।
জট পাকানো জীবনঃ
ব্রেকাপের পরে অনেকের জীবন কমপ্লিকেটেড হয়ে যায়। চিন্তা চেতনায় থাকে তার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত। ব্রেকাপের পর শুনতে হয় কত মানুষের কত কথা। প্রশ্ন উত্তরের ছড়াছড়ি। সবাই আসে দরদ দেখাটে। প্রশ্নের ছলে আসে জালাতে। বন্ধু, শত্রু, পাড়া-প্রতিবেশি, ভাই-ব্রাডার সবাই আসে লেকচার দিতে। আপনি আজ কিছুই না, তারা মহাজ্ঞানী আসছেন আপনার মাথায় জ্ঞান দিতে। এমনিতেই ব্রেকাপের পর মন মেজাজ তেমন ভালো থাকে না। এসব তখন যন্ত্রনা মনে হয়। যার মন ভাঙ্গে সে বুঝে যন্ত্রনা কতটুকু। লোকের এসব এক্সট্রা পেরায় আপনি উপকৃত হবেন না বরং বিভ্রান্ত হবেন।
ব্রেকাপের পরে আমরা প্রায় সবাই চেষ্টা করি তার সাথে সকল স্মৃতি মুছে ফেলবো। তার ছবি, গিফট এবং সবকিছু ঘর ও ফোন থেকে ফেলে দেই। স্মৃতি কি ফেলে দেওয়া যায়। মুছে ফেলাও যায় না। এই স্মৃতি জীবনকে খুব পীড়া দেয়। এরা খুব সহজে মন থেকে সরে যায় না। যখনই ওসব থেকে উঠে ঘুরে দাড়াতে চাইবেন দেখবেন তখনই আপনার সাথে এমন কিছু ঘটে গেছে যা আপনাকে তার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।
শেষ কথাঃ
ব্রেকাপের ফলে জীবন তার গতি হারিয়ে ফেলে। থাকেনা কোন অনুভুতি। যেখানেই যাবেন তার দেখা মিলবে হয়ত এইদেখা মনের চোখের দেখা। পার্কে যাবেন অন্য কাপলদের দেখে আপনার মনে তার স্মৃতি ভেসে উঠবে। কোন একটা জায়গা বা পার্কের বেঞ্চ দেখে তাকে মনে পরবে। কত স্মৃতি এসবের সাথে।
যাকে ভালোবাসেন তার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেষ্টা করুন। বিচ্ছেদের মত বেদনাদায়ক ঘটনা আর ঘটবে না। তার ভালোবাসা পেতে আগে তার মন বুঝতে হবে। সে কি চায়, কি তার ভালো লাগে আগে তাই বুঝুন। তাকে বেশি গুরুত্ব দিন। দেখবেন প্রেম চলছে সুন্দর ভাবে। এখানে ক্লিক করে জানুন কিভাবে ভালোবাসার মানুষকে আকর্ষণ করবেন।
এসবের কারনেই জীবনে জট পাকিয়ে যায় ব্রেকাপের পরে। তবু আপনাকে টিকে থাকতে হবে। সুন্দর জীবন পার করতে হবে। ব্রেকাপ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। সেই শিক্ষা নিন। নতুন কাউকে খুঁজে নিন। আগের জনার মাঝে যে অপূর্ণতা ছিলো তা নতুনের মাঝে যেন না থাকে। জীবন আবার সুন্দর হয়ে যাবে।