দুর্নীতির শ্রেনীবিন‍্যাস এবং সমাজে দুর্নীতির প্রভাব।

Spread the love

দুর্নীতির শ্রেনীবিন‍্যাস এবং সমাজে দুর্নীতির প্রভাব।

যে কোন দেশের দুর্নীতিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

(কথাগুলো কেউ রাজনৈতিক ভাবে না নেয়ার অনুরোধ রইল)

১) White Criminal
     ক) Red Criminal
     খ) Yellow Criminal এবং
     গ) Green Criminal

২) Black Criminal
ক) Government Criminal
     খ) Political Criminal এবং
     গ) Garbage Criminal।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যত দুর্নীতি হয় তার ৮০ শতাংশ White criminal গন করে থাকে বাকি ২০ ভাগ Black crimer গন করে থাকে।

১) ধরুন একটি দেশের বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া এবং গনমাধ‍্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১০ বছরে ৯ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশ পাচার হল, সমযোতা ঋন ১ লক্ষ কোটি টাকার উপর, কুঋন ২ লক্ষ কোটি টাকা। এগুলো সবই করে সাদা দুর্নীতিবাজরা। এ ধরনের দুর্নীতি সাধারণের পক্ষে সম্ভব নয়।

২) অন্য ভাবে বলা যেতে পারে যেমন: একজন ঠিকাদার একটি কাজ পেল ১০০ কোটি টাকার পরবর্তীকালে বিভিন্ন অজুহাতের মাধ্যমে বর্ধিত কাজ দেখিয়ে দুর্নীতিবাজ কর্তাব্যক্তিদের সহয়তায় ৫০০ কোটি টাকার বিল বানিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে গেল। এগুলোও সাদা দুর্নীতিবাজদের কাজ। এভাবেই White criminal রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নিজেদের আখের গোছায় এবং রাষ্ট্রের আর্থিক খাত ধ্বংস করে দেয়।

White Criminal কে আবার ৩ (তিন) ভাগে ভাগ করা যেতেপারে:

ক) Red criminal

এধরনের দুর্নীতিবাজরা রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর ব‍্যক্তি। এরা হচ্ছে যারা ব‍্যাংক লুটপাটে জড়িত, মূদ্রা পাচারে জড়িত, বড় বড় টেন্ডারের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ কর্তাব্যক্তিদের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এধরনের লুটেরারা উক্ত টাকা দেশে বিনিয়োগ করে না। এরা পরক্ষভাবে রাষ্ট্র তথা রাষ্ট্রের জনগনকে লাল কার্ড দেখিয়ে টাকা বাহিরে পাচার করে দেয়। এদেরকেই বলা হয় Red Criminal।

খ) Yellow Crimina

এরা হচ্ছে আমলাতন্ত্রের কর্তাব্যক্তিরা। এরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করে White Criminal দের লুটপাটের জন‍্য সহয়ায়তা প্রদানকারী ব‍্যক্তি। আমলাতান্ত্রিক ব‍্যবস্থায় বড় বড় প্রজেক্ট তৈরী করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটে সহয়তা প্রদান করে। অনেক সময় দেখাযায় একজন দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের বাৎসরিক আয় শতাধিক কোটি টাকারও বেশি বলে শোনা যায়। উক্ত দুর্নীতির স্থানে বদলি হতে অনেক সময় কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দেয়ার কথা শোনা যায়। এরা সমুদয় টাকা নিজ দেশে বিনিয়োগ করতে পারে না। রাষ্ট্রীয় ব‍্যবস্থাপনাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে বেশীভাগ টাকা বিদেশের মাটিতে টাকা পাচার করে থাকে। সামান্য কিছু টাকা নিজ দেশে বিনিয়োগ করে। এরাই হচ্ছে Yellow Criminal।

গ) Green Crimina

এর বেশীরভাগই হচ্ছে ব‍্যবসায়ী শ্রেনির। সরকারি কাজে নিয়োজিত কতিপয় কর্মকর্তার যোগসূত্রের মাধ্যমে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে মনোপলি, অলিগোপলি জাতীয় অথবা একচেটিয়া অথবা আংশিক একচেটিয়া ব‍্যবসা করে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে। এদের বেশীভাগ যেহেতু ব‍্যবসায়ী এবং টাকাগুলো নিজদেশে বিনিয়োগ করে এজন‍‍্য এদের কারনে রাষ্ট্রের ক্ষতি তুলনামূলকভাবে কম হয়। এজন্য এধরনের দুর্নীতিবাজদের Green Criminal বলা হয়।

২) Black Criminal কে আবার ৩ (তিন) ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

ক) Government Criminal

রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারিরা সরাসরি অথবা অন‍্যের মাধ্যমে চুরি, ডাকাতি, চাদাবাজি, ছিনতাই, মাদক পাচার, রাষ্ট্রের সম্পত্তি পাচার, গুম-খুন, মামলা-হামলা, মাদক দেখিয়ে মিথ্যা মামলা ইত্যাদির মাধ্যমে অবৈধভাবে আয় রোজগার করে। এদেরকে Government Criminal বলা হয়ে থাকে।

খ) Political Criminal

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের সহয়তায় চাদা-বাজী, ছিনতাই, মাদক ব‍্যবসা, মারা-মারী, ভুমি দখল, টেন্ডার বাজী, নৌ এবং গনপরিবহনে চাদাবাজী, ফুটপাতের চাদাবাজী এবং জুয়াড়ীদের সহয়তা প্রদান ইত্যাদি করে থাকে এদের প্রভাব এবং আকৃতি তুলনামূলক ভাবে বৃহতাকারে হয়ে থাকে। এদেরকে Political Criminal বলা হয়ে থাকে।

গ) Garbage Criminal

ছিচকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক গ্রহন এবং বিক্রি, ছোট আকারের চাদা আদায় করা, নৌ এবং গনপরিবহনে ছিচকে চাদা, ইফটেজিং এর মাধ্যমে টাকা আদায় ইত্যাদি ছোটখাটো অপরাধ করে থাকে। এদেরকে Garbage Criminal বলা হয়ে থাকে। এরা সমাজের সর্বনিম্নমানের অপরাধি বলে বিবেচনা করা হয়।

উপরোক্ত কারণে সমাজে কি ধরনের প্রভাব পরে তা পয়েন্ট সম্বলিত সংক্ষিপ্তাকারে দেয়া হলঃ

১) ধনি দ্রুতগতিতে আরও ধনি হয় এবং গরিব আরও গরিব হয়।
২) পুজিবাদী রাষ্ট্র কাঠামো তৈরী হয়।
৩) গনতন্ত্রের পরিবর্তে ফ‍্যসিবাদ অথবা সৈরাচারি কায়দায় রাষ্ট্র পরিচালিত হতে বাধ‍্য।
৪) সমগ্র রাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্নীতিতে জরিয়ে যায়।
৫) স্থানিয় পর্যায়ে সাধারণ জনগনের ভোটাধিকার ব‍্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যায়।
৬) বিচার ব‍্যবস্থায় সাধারণ জনগণের অনাস্থা তৈরি হয়।
৭) সমগ্র রাষ্ট্রের সাভাবিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিপালনে ব‍্যর্থ হয়।
৮) বেকারত্ব বেড়ে যায়।
৯) রাষ্ট্রীয় হতাশা বেড়ে যায় এবং সাভাবিক কার্যক্রম ব‍্যহত হয়।
১০) বিভিন্ন ধরনের অপরাধ চারিদিকে ছড়িয়ে পরে এবং এগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।
১১) আর্থিক বৈষম্য বিস্তার ফারাক হয়।
১২) দেশ ব‍্যপি অসন্তোষ লেগেই থাকে।
১৩) বিদেশী বিনিয়োগ কমে যায়।
১৪) এলাকায় এলাকায় বিভেদ ছড়িয়ে পরে।
১৫) ক্ষমতাশীল দলের মধ্যে সার্থের কারনে বহুদলীয় বা গ্রুপ তৈরিতে সহজ হয়।
১৬) জনসমর্থন ব‍্যপকভাবে হ্রাস পায়।
১৭) মদকাসাক্ত সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
১৮) যুব সম্প্রদায়ের একটি বর অংশই মাদকের দিকে ঝুকে পড়ে।
১৯) যুবকদের জীবন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হয়।
২০) বিবাহযোগ‍্য ছেলে এবং মেয়েদের সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়।
২১) চুরি, লুন্ঠোন, রাহাজানি, লেগেই থাকবে।
২২) সমগ্র দেশে অনিয়ম নিয়মে পরিনত হবে।
২৩) সৎ লোকদের বোকা বলা হবে এবং অসৎ লোকদের বুদ্ধিজীবী বলা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

মোঃ মানসুর আলম সিকদার।


Spread the love

Aspire Cot

I am just a grave of thoughts. I know only one thing that I know nothing. people with nothing to declare carry the most but be sure I am exceptional.

You may also like...

1 Response

  1. Jannat says:

    well said.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *