পর্নোগ্রাফি কারা তৈরী করে, কেন তৈরী করে? বিশ্ব অর্থনীতিতে এতে করে কারা লাভবান হচ্ছে?
পর্নোগ্রাফি কারা তৈরী করে, কেন তৈরী করে? বিশ্ব অর্থনীতিতে এতে করে কারা লাভবান হচ্ছে?
শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্নগ্রাফি সবার হাতের মুঠোয় ও অতি নিকটে, যা শুধু অসংখ্য মানুষের জীবনের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করছে না ভেঙ্গে দিচ্ছে পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থাপনার মূল অবকাঠামো। যেটি একটি করোনা ভাইরাসের মহামারির মতো পর্নোগ্রাফি ভাইরাস। অথচ অধিকাংশ মানুষ এই মহামারি বিপদের তীব্রতা সম্পর্কে জানে না জানতে আগ্রহী হও না। কিন্তু যেকোন ঘরে রয়েছে এই মহামারির অবাধ অনুপ্রবেশ।
আমাদের সমাজে অপরাধের কমতি নেই চুরি, ডাকাতি, মাদক, ধর্ষন, খুন, ইভটিজিং, চাঁদাবাজি ইত্যাদি যেগুলো করতে হলে একজন ব্যাক্তিকে অবশ্যই ঘর থেকে বের হতে হবে, সামান্য হলেও ঝুঁকি বহন করতে হবে, ধরা পড়ে গেলে তাকে জরিমানা বা শাস্তির সমূখীন হতে হবে। কিন্তু এই কাজ গুলো পর্নগ্রাফির অপরাধের মতো এতো সহজেলভ্য নয়, এই পর্নগ্রাফি দেখতে হলে এই অপরাধ করতে হলে নিদিষ্ট কোনো বয়সসীমা প্রযোজ্য নয়। তাছাড়া এই অপরাধ করতে বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই জাস্ট একটা মোবাইল ফোন, না হয় একটা Smart 📱 টেপ এটাই হলে চলবে ব্যস।
কারা দেখে পর্নগ্রাফি?
আসলে এইসব পর্নোগ্রাফি কারা দেখছে, তারা কি বিভিন্ন গ্রহের কোন প্রাণী, না তারা আমাদের মতই মানুষ, সবচেয়ে বড় অবিশ্বাসের বিষয় কি জানেন ..?তারা আমাদের এই নিকট আত্মীয় আপনার আমার খুব কাছের মানুষ তাদের অবস্থান কি পর্যায়ে আছে ঐ তথ্যটা একটু দিই। এখন আপনাকে যেই তথ্য আমরা দিব তা শুনলে আপনার অবস্থান স্বাভাবিক ও স্থির থাকার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ। Just একটা রিপোর্ট জরিপ।
২০১২ সালের কয়েকটি স্কুলের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের উপর চালানো জরিপ অনুযায়ী শতকরা ৭৬ জন শিক্ষার্থীর নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন রয়েছে। শতকরা বাকি ২৬ জন মা-বাবার ফোন ব্যবহার করে। তাদের মধ্যে ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী সুযোগ ফেলে মোবাইলে পর্ন দেখে, বাকি ক্লাস রুমে বসে পর্ন দেখে থাকে ৬২ শতাংশ।
অর্থনিতে কতটা প্রভাব ফেলে পর্নগ্রাফি?
বেসরকারী এক তথ্য উঠে এসেছে ফটোকপি আর মোবাইলে গান, মুভি, নাটক, “লোড” করে দেয়ার দোকান গুলো থেকে দৈনিক ২.৫ কোটি টাকা পর্ন বিক্রি হয়। (তথ্য সূত্র মুক্ত বাতাসের খোঁজে বই সংগৃহীত)
এইসব তথ্য আরো আট বছর আগের কথা অর্থাৎ ২০১২ সালের রিপোর্ট, যখন Smartphone, Android ফোন ব্যবহার করা, মোবাইলে Internet ব্যবহার করা এত সহজলভ্য ছিল না যার সংখ্যা ছিল খুব কম। এবার নিজে একটু ভাবুন এখন ২০২০ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যপক ব্যবহার, Wi-Fi Available বাসায়, রেস্টুরেন্ট এ সাধারন দোকান-পাটে, তাছাড়া এখন তো গ্রাম পর্যায়ে Wi-Fi সংযোগ চলে গেছে, তাহলে বর্তমানে অবস্থাটা কি হতে পারে একবার ঠান্ডায় মাথায় চিন্তা করুন।
এবার আসুন দেশের কথা বাদ দিয়ে আর্ন্তজাতিক ভাবে এর অবস্থান কি, পর্ন কেন তৈরী করা হয়, যারা তৈরী করে তাদের কি লাভ এইসব বিষয় নিয়ে একটু আলোকপাত করি… !
যখন কোন সমীকরণে সাথে অর্থনীতি বা আর্থিক লেনদেন ঢুকে পড়ে, সবচেয়ে সোজা বিষয়বস্তু গুলোও চরম গোলমেলে হয়ে প্রকাশ পায়। সেইরকম একটি বিশাল অর্থনীতির লেনদেন রয়েছে এই গ্লোবাল পর্নোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রির গুলো সাথে যে গুলোকে এক প্রকার সোনার হরিণ বলা যেতে পারে, যেখানে যুক্ত আছে শত শত বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। এই ধরুন ২০০৬ সালের পর্নোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রির মোট ইনকাম ছিল ৯৭ বিলিয়ন ডলার যার টাকার অঙ্ক আমার আপনার Calculator আসবে না। শুধু তাই নয় বিল গেটস এর কোম্পানি Microsoft, Google, Amazon, Yahoo, iPhone তৈরির একমাস প্রতিষ্ঠান Apple এবং Netflix এই সব গুলোর সম্মালিত আয়ের চেয়ে বেশী।
বছরে এই পর্নোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রির প্রফিট ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলার একটু খাতা-কলম নিয়ে হিসাব করুন। সে তুলনায় Hollywood এর বছরের আয় ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। আর এটাতো প্রকাশিত লাভের হিসাব। তাছাড়া পর্ন ইন্ডাস্ট্রির Site গুলোর বড় একটা অংশ রির্পোট করা হয় না। যখন কোনো কিছুর সাথে এত বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা জড়িত, তখন সেটা ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা বেশ কষ্ট-সাধ্য হয়ে যায়। সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসকে রক্ষা করাটা হয়ে যায় রুটি- রুজি আর পুঁজির একমাত্র প্রশ্ন। Pharmacycle, Hotel and Tourism Management, ক্যাইবল ও স্যাটেলাইট, Television Network, Global Sex Trafficing, Sexiously and সাইকোলজি এই সব ইন্ডাস্ট্রি , বিভিন্ন ভাবে লাভবান হয়ে থাকে এই পর্ন জগতের মাধ্যমে যার বেশির ভাগ কোম্পানি দখল করে আছে ইউরোপ, রাশিয়া, আমেরিকা ও চীন মতো উন্নতশীল দেশগুলো এখন তা ধীরে ধীরে ইন্ডিয়াতে হও প্রবেশ করেছে। যার প্রচার ও প্রসার বিভিন্ন Hollywood ও Bollywood মুভিতে আমরা দেখতে পাই যার অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে ইন্ডিয়ান আইটেম Song যা মানুষকে পর্নোগ্রাফি দিকে নিয়ে যায় যার প্রচলন আমরা বিয়ে বাড়ি ও হলুদ অনুষ্ঠানে দেখতে পাই। Bollywood এর গান, মুভি সাথে যুক্ত আছে আমাদের সমাজের অসংখ্য যুবক- যুবতী যা তাদের পরবর্তীতে পর্যায়ে ক্রমে পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুন দিকে নিয়ে যায়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কি জানেন ভারতের বার্জেটের বড় অঙ্কের একটা ইনকাম আসে এই ফিল্ম
ইন্ডাস্ট্রি থেকে অর্থাৎ Bollywood 🎥 থেকে যার বিশাল অংশ ব্যবহার করে বাংলাদেশীরা এমন ছেলে ও মেয়ে খুব কম পাবেন যার স্মার্ট ফোনে Bollywood এর Movie অথবা গান পাবেন না।
অবশেষে বলবো দেখতে দেখতে বহু ভাত ভাত দুপুর আর বেলা ফুরাবার আগে সকাল পাড় করে পর্নোগ্রাফি ঘন কালো আধার ঢুকে পড়েছে আপনার এই ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে। পর্নোগ্রাফির বিষাক্ত কামড় থেকে আজ আমি, আপনি, আমাদের সন্তান, আমাদের প্রতিবেশী, আমাদের বন্ধু, আমাদের ছোট শিশুটি কেউ নিরাপদ না। সবাই সম্ভাব্য ভিকটিম। পর্নোগ্রাফি ছোবলে আটকা পড়েছে কোটি কোটি শিশু – কিশোর। ভেঙে গেছে পারস্পরিক বিশ্বাস, লন্ডবন্ড হয়ে গেছে অগণিত পরিবার। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পবিত্র আত্মা যার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মুসলিমদের ইতিহাসের বীরপুরুষ সালাউদ্দিন আইউবীর জেরুযালেম জয় করার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণের তিনি বলেছিলেন”:-
————-___——–
“যদি তুমি যুদ্ধ ছাড়া কোনো জাতিকে ধ্বংস করতে চাও,তবে যুব সমাজের মাঝে ব্যভিচার আর নগ্নতা সহজলভ্য করে দাও”
——–___——–___——
পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের ক্ষেত্রে সেই একই কাজটি করেছে তার একটি রিপোর্ট আপনাদের সামনে তুলে ধরি তাহলে বুঝতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ
বাংলাদেশে এর প্রভাব
বাংলাদেশ থেকে এক মাসে Google.com এ “পর্ন” Word টি সার্চ করা হয়েছে ০.৮ মিলিয়ন এর চেয়েও বেশি। আর সারা বিশ্বে সার্চ করা হয়েছে ৬১১ মিলিয়ন বার। অন্যদিকে বাংলাদেশের SEX শব্দটি সার্চ করা হয়েছে ২.২ মিলিয়ন বার। বিশ্বে করা হয়েছে ৫০০ মিলিয়ন বার। যা ৩০ শে জুলাই ২০১৩ সালে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সংস্থা অথাৎ (BSS) এই রিপোর্ট টি প্রকাশ করে। তাদের রিপোর্টে আর বলা হয়, শুধুমাত্র ঢাকার কপিশপ, সাইবার ক্যাফে থেকে প্রত্যেক মাসে Download করা পর্ন এর দাম প্রায় ৩ কোটি টাকার মত। “মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন”
ও Somoy TV 📺 রিপোর্টে উঠে আসে রাজধানী ঢাকার ৭৭ শতাংশ কিশোর পর্ন ভিডিওতে আসক্ত তাদের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।
মা-বাবারা কি ভাবছেন?
আশ্চর্য জনক বিষয় কি জানেন কোন বাবা-মা এই বিশ্বাস করতে চায় না তাদের আদরের সন্তান, তাদের সাত রাজার ধন, পর্ন দেখার মত এত জঘন্য একটা কাজ ও এতটা নিচে নামতে পারে। আমার এই পোস্টটা যেসব মা-বাবা, বড় ভাই-বোন পড়েছেন এখন থেকে আপনার ছেলে-মেয়েকে, ছোট ভাই-বোনকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে ও ক্ষতিকর দিক সমূহ নিয়ে তাদেরকে যুক্তিসহ বুঝিয়ে বলবেন, তা”না হলে এই মহামারি আপনার সাজানো সংসারকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে।
একসময় আমাদের মুসলিমদের ছিল গৌরবময় সংগ্রামী ইতিহাস, এখন শুরু হয়েছে এক ঘন কালো অন্ধকার অধ্যয় যা আজও মুসলিম যুবক-যূবতীদের মধ্যে চলমান। যাদের দিনের বেশীর সময় কাটে এই পশ্চিমা বিশ্বের সংস্কৃতি চর্চায় নিজেকে Hollywood, Bollywood আর items Song নিয়ে ব্যস্ত রেখে,নিজেকে ধ্বংস করে দিচ্ছে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সমাজকে নিয়ে গেছে জাহিলিয়াতে, কাফের এরা জানে মুসলিম যুবকদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহ ভয় আর যদি যুব সমাজকে আল্লাহর ভয় দূর করাতে হয় তাদের মধ্যে যদি অশ্লীলতা দিয়ে ধ্বংস করে দিতে পারে তাহলে এই জাতি আর উন্নতি করতে পারবে না, আমাদের কে ব্যবহার করে তারা তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতেছে।
তাইতো আজ আমরা পরাজিত জাতি, আমাদের পর্ন দেখার ইনকাম দিয়ে তারা আমাদের এই মুসলিম ভাই-বোনদের কেই নিযার্তিত করছে সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন , ফিলিস্তিনের ভাই বোনরা আমাদের ইমানী দূর্বলতার কারনে তারা নিযার্তিত।
আল্লাহর আযাব আসার আগে আপনি নিজেকে পরকালের জন্য প্রস্তুত করেন ড্রেসবিনে ছুড়ে ফেলে দিন এই অশ্লীলতাকে, আপনি পারবেন । ইনশাআল্লাহ