বিশ্বব্যাপি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ২০২২ নাগাদ কি কি ঘটতে পারে? উত্তোরনের পথ কি হতে পারে?
“বিশ্বব্যাপি করোনার কারণে ২০২২ সাল নাগাদ কি কি ঘটতে পারে এবং উত্তোরনের পথ কি হতে পারে?”
করোনা ভাইরাসের আগ্রাসি থাবা দির্ঘায়িত হলে বা করোনা ভাইরাসের প্রভাব বাড়তে থাকলে বিশ্বব্যাংক, ADB, UNO, BFIU, বিশ্ব খাদ্যসংস্থা, বিভিন্ন গনমাধ্যমের সূত্র এবং সম্পাদকীয় তথ্যের ভিত্তিতে এই মর্মে আশঙ্কা করছিঃ
১) করনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ লোক বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বিশ্বব্যাপি বেকারত্তের অভিশাপ দানবের মত রূপ নিবে।
২) বিশ্বব্যাপি শিতল যুদ্ধ হবে এবং অর্থ-বানিজ্যের
৩) হতাশাজনক ভাবে অভিশপ্ত বেকারত্ব দেখাদিবে এবং ঘড়ে ঘড়ে বিবাহযোগ্য তরুণ-তরুনী অবিবাহিত থেকে যাবে ফলে অ-নিয়ন্ত্রীত যৌনাচার এবং ব্যবিচার বেড়ে যাওয়ার আশংকা বেড়ে যাবে।
সামন্য বাংলাদেশের উদাহরণ দেয়াযেতে পারে:
– সড়ক-নৌ শ্রমিক আছে ৯০ হাজার,
– গার্মেন্টসে কর্মরত আছে প্রায় অর্ধ কোটি,
– ইমারত নির্মাণে কর্মরত প্রায় অর্ধ কোটি,
– বীমা (ডেভলাপমেন্ট) সেক্টরে কর্মরত প্রায় ২৫ লাখ। এভাবেই মোট বেসরকারিভাবে কম-বেশী কর্মরত ৩ (কোটি) লোক কর্মরত আছে। এদের মধ্যে কমপক্ষে ৩৫% লোক বেকার হয়ে পরার আশঙ্কা আছে।
– লকডাউন চলতে থাকলে ঐ লোকগুলোর কথা ভাবতে গেলেও গা সিহরিয়া ওঠে। গভির ভাবে একটু ভেবে দেখুনতো আমরা কোন পথে যাচ্ছি। এখানে রাষ্ট্রীভাবে সরকার কতদুরইবা সামলাতে পারবে বা সক্ষমতাই বা কতটুকু আছে এটা সহজেই অনুমেয়।
৪) গনতান্ত্রীক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরবে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলোতে আর্থিক খাতে চরম অব্যবস্থাপনা দেখাদিবে।
৫) পৃথিবীর অনেক দেশে ভয়াবহ খাদ্যাভাব দেখা দিবে এর ফলে লক্ষ লক্ষ লোক খাদ্যাভাবে মারা যাবে। হয়ত টাকা থাকবে খাদ্য থাকবে না। ইতোমধ্যে কতিপয় দেশ খাদ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
৬) যেই যেই দেশের সরকার গনতন্ত্রীক ব্যবস্থা প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে অবৈধ সরকার গঠন করেছে, সেসব দেশে বিশৃঙ্খলা দেখাদিতে পারে।
৭) চলতি বছরে ভয়াবহ অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিতে পারে।
৮) ইতিমধ্যে অনেক খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ খাদ্য বন্ধ অথবা বন্ধ করার প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আছে। ফলে খাদ্য আমদানিকারক দেশগুলোতে বহু লোক না খেয়ে মারা যেতে পারে।
৯) করনা ভাইরাসের কারণে যতলোক মারাযাবে তারচেয়ে অনেক বেশী লোক ক্ষুদায় মারা যাবে বলে আমি আশঙ্কা করছি।
১০) বিশ্বব্যাপি দারিদ্র্যতা অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে ফলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যপক আকার ধারন করতে পারে।
১১) যেই রাষ্ট্রগুলো অবৈধভাবে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আর্থিক খাতে লুটপাট, মূদ্রা পাচার, রাষ্ট্র-যন্ত্র ব্যবহার করে গুম, খুন, মামলা, হামলা, জুডিশিয়াল খুন, মিথ্যা মামলা-হামলা এবং বিরোধী মত সহ্য করতে পারেনা। সেসব দেশের সমস্ত ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়বে। ফলে –
১২) সেই দেশেগুলোতে মারামারি হানাহানি ছড়িয়ে পরবে, অন্যায় অত্যাচার, মূদ্র-তহবিল লুন্ঠন, দুর্নীতি, মূদ্রা পাচার, ত্রান তহবিল লুন্ঠন এবং জালিয়াতি সিমা ছাড়িয়ে যাবে।
১৩) দারিদ্র্য পিরিত দেশগুলোতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ এবং রাহাজানি ভয়াবহ রূপে আবির্ভূত হবে।
১৪) যে দেশে যত বেকারত্ব দেখা দিবে সেই দেশগুলোতে তত অরাজগতা বেশি দেখা দিবে। উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশের কথা বলা যেতে পারে এদেশে সড়ক-নৌযান খাতেই শ্রমিক আছে ৯০ হাজার, গার্মেন্টস খাতে আছে প্রায় অর্ধ কোটি, বীমা খাতে আছে (ডেভেলাপমেন্ট) প্রায় ২৪ লাখ, নির্মাণকর্মী আছে প্রায় অর্ধ কোটি এরা প্রায় বর্তমানে সবাইকে সাময়িক ভাবে বেকার বলা যেতে পারে।
১৫) শুধুমাত্র ফেসবুকের মাধ্যমেই ইদানিংকাল সামান্য কটা টাকার জন্য টিনেজার টাইপ মেয়েরা কি না করছে? একটু ভেবে দেখুন তো!
১৬) যে সব দেশে রাষ্ট্রক্ষমতা ধর্মীয় কৌশলে আবদ্ধ সেসব দেশে গৃহযুদ্ধের আবির্ভাব ঘটতে পারে এবং অর্থনৈতিক অবস্থা চরম অবনতি হতে পারে। উল্লেখযোগ্য ভাবে ভারতের কথা বলা যেতে পারে।
১৭) যে সব দেশে লুটপাট, অর্থ পাচার, ঘুষ, দুর্নীতি, জোর-যুলুম, গুম-খুন-মিথ্যা
১৮) দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোতে অসৎ কতিপয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সধারন ব্যক্তিদের চরম ক্ষতি হতে পারে এবং সেদেশ গলোতে ভয়ংকর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।
১৯) বেশির ভাগ দেশে মূদ্রানিতিতে হস্তক্ষেপ করবে এবং মূদ্রাস্ফিতি ঘটবে যার ফলশ্রোতিতে সল্প আয়ের লোকেরা গভীর সংকটে পড়বে।
“তিন বছরের কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে করোনা ভাইরাসের প্রভাব ও ক্ষতি থেকে উত্তোরনের পথ হতে পারে, যদি আল্লাহ্ আমাদের প্রতি সদয় হন”।
কি কি করা যেতে পারে তিন বছরেঃ
১) কৃষির উপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি ভাবে প্রনদনা দেয়া এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে ভর্তুকি দিয়ে হলেও খাদ্য মওজুদ নিশ্চিত করতে হবে।
২) ভর্তুকি দিয়ে হলেও বেকারত্ত্ব ব্যবস্থা কন্ট্রোল করতে হবে।
৩) জোরালো ভাবে ঘুষখোর, ব্যাংক লুটেরা, অর্থপাচারকারী, টেন্ডারবাজ, মাদক ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
৪) আইন শৃঙ্খলার সাথে নিযুক্ত কতিপয় বিপদগামি কর্তাব্যক্তিদের
৫) দল-মত নির্বিশেষে যাচাইবাছাই করে সৎ লোকদের সমন্ময়ে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে হবে।
৬) স্ব স্ব দায়িত্ব নিয়োজিত ব্যক্তি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে ভাবে পরিপালন করছে কিনা তা তদারকি করতে হবে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৭) আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং দায়িত্ব সূচারূপে সক্ষমতা অর্জন করল কিনা সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
৮) খাদ্য অধিদপ্তরের দায়িত্ব রত ব্যক্তিদেরকে কঠোর এবং সৎ অবশ্যই হতে হবে এবং এদের কর্মপদ্ধতি সঠিকভাবে পরিপালনে সক্ষম হল কিনা নিশ্চিত হতে হবে।
৯) বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভোজন বিলাস বাধ্যতামূলকভাব
১০) রাষ্ট্রীয়ভাবে অপচয় রোধ করতে হবে।
১১) সর্বক্ষেত্রে খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আনতে হবে।
১২) যেসব দেশের তথাকথিত জনপ্রতিধির জবাবদিহিতা নাই অথবা পরিক্ষিত লুটেরা সেই সমস্ত দেশে সেনাবাহিনী কর্তৃক সরকারি ত্রাণ অথবা রেশনিং পদ্ধতি কর্ম পরিচালনা করতে হবে।
১৩) সতর্কতার সাথে মূদ্রানিতিতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। যাতে মূদ্রাস্ফিতির নিয়ন্ত্রণ সীমিত থাকে।
তবেই কেবল সম্ভাব্য বিপদ থেকে সহনিয় রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। বিশ্বে করোনা করোনা ভাইরাসের প্রভাব কমে আসুক। সুন্দর বাসযোগ্য একটা পৃথিবী পাক আমাদের আগামী প্রজন্ম।
আমার মতামতের প্রতি সবাই একমত নাও হতে পারেন এটাই সাভাবিক। তবে অনেকে খুব বাজেভাবে মন্তব্য করেন। এগুলো না করলে খুশী হব এবং আপনার মতামত থাকলে তুলে ধরুন।
মোঃ মানসুর আলম সিকদার।
বীমা লেখক।
ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অবলিখন প্রধান,
রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ।